আজ ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বে জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়েছে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন


পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়েছে আজ। গত সপ্তাহে জাতিসংঘ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিশ্বে জীবিত মানুষের সংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়াবে। ওয়ার্ল্ডোমিটারে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ১০ হাজার জন হয়েছে। ২০২২ সালে বিশ্বে ১১ কোটি ৯৫ লাখের বেশি মানুষ জন্মগ্রহণ করেছেন।

এই ঘটনাকে মানব ইতিহাসে একটি অন্যন্য অর্জন হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। তাদের মতে, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নতি, পুষ্টি, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং উন্নত ওষুধের কারণে মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। আর এ বিষয়টি জনসংখ্যা বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি।

জাতিসংঘের ২০২২ সালের জনসংখ্যা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর পরবর্তী ১০০ কোটি মানুষের বেশিরভাগের জন্ম হবে আটটি দেশে। সেগুলো হলো- কঙ্গো, মিসর, ইথিওপিয়া, ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও তানজানিয়া।

বিশ্বের জনসংখ্যা ৭০০ কোটি থেকে ৮০০ কোটি হতে ১২ বছর সময় লেগেছে। তবে ৯০০ কোটি হতে প্রায় ১৫ বছর (২০৩৭ সাল পর্যন্ত) সময় লাগবে। কারণ বিশ্ব জনসংখ্যা বাড়ার সামগ্রিক হার ধীর হয়ে যাচ্ছে। অধিক এ জনসংখ্যা কি পৃথিবীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে? অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, প্রশ্নটি ভুল। অতিরিক্ত জনসংখ্যা ভীতির পরিবর্তে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের পৃথিবীর সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারের দিকে নজর দেয়া উচিত।

জনসংখ্যায় পৃথিবীতে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- চীন (১৪২ দশমিক ৬ কোটি), ভারত (১৪১ দশমিক ২ কোটি), যুক্তরাষ্ট্র (৩৩ দশমিক ৭ কোটি), ইন্দোনেশিয়া (২৭ দশমিক ৫ কোটি), পাকিস্তান (২৩ দশমিক ৪ কোটি), নাইজেরিয়া (২১ দশমিক ৬ কোটি), ব্রাজিল (২১ দশমিক ৫ কোটি), বাংলাদেশ (১৭ দশমিক ১ কোটি)। ১৯৫০ সালের বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ২.৫ বিলিয়ন (আড়াইশ কোটি)। গত ৭২ বছরে তিনগুণের চেয়ে বেশী বেড়েছে জনসংখ্যা।

জাতিসংঘের অনুমিত হিসাবে বলা হয়, ২০৩০ সালে জনসংখ্যা প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন, ২০৫০ সালে ৯.৭ বিলিয়ন এবং ২০৮০-এর দশকে প্রায় ১০.৪ বিলিয়ন হবে। যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) ২০২০ সালের একটি গবেষণায় অনুমান করেছে যে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা ২০৬৪ সালের মধ্যে সর্বাধিক বৃদ্ধি পাবে, তবে কখনই ১০ বিলিয়নে পৌঁছাবে না এবং ২১০০ সালের মধ্যে ফের ৮.৮ বিলিয়নে নেমে আসবে। ফরাসি ইনস্টিটিউট ফর ডেমোগ্রাফিক স্টাডিজ অনুসারে, ১০,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রায় ৬০ লাখ থেকে বিশ্ব জনসংখ্যা ২,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ১০ কোটি এবং তারপর খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে ২৫ কোটিতে উন্নীত হয়। ব্লাক ডেথের ফলে ১৩০০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে মানুষের জনসংখ্যা ৪৩ কোটি থেকে ৩৭ কোটিতে মিলিয়নে নেমে আসে।

অন্যান্য ঘটনা, যেমন প্লেগ অফ জাস্টিনিয়ান, যা ৫৪১ থেকে ৭৬৭ সালে দুই শতাব্দী ধরে ভূমধ্যসাগরে আঘাত হানে এবং পশ্চিম ইউরোপে মধ্যযুগের প্রথম দিকের যুদ্ধগুলিও পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যায় সাময়িক হ্রাস ঘটায়। ১৮০০ সাল থেকে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ হতে শুরু করে, মূলত আধুনিক ওষুধের বিকাশ এবং কৃষিতে শিল্প বিপ্লবের কারণে, যা বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। ১৮০০ সাল থেকে বিশ্বের জনসংখ্যা আট গুণ বেড়েছে, সে সময় আনুমানিক ১০০ কোটি জন ছিল জীবিত মানুষের সংখ্যা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর